
(১) নাম (বাংলা) : শামুকখোল পাখি।
(২) ইংরেজিঃ ASIAN OPEN BILL STORK.
(৩) চোখের অড়ালে থাকা এ পাখিদের সমবেতভাবে ষাটের দশকে ১ম চোখে পড়ে।
(৪) এই পাখিরা একটানা ১৫০০ কিমি পর্যন্ত আকাশপথ অতিক্রম করতে পারে।
(৫) এরা শামুক, ব্যাঙ, মাছ, কাঁকড়া, সাপ বিভিন্ন পোকামাকড় খায়।
(৬) প্রজনন ঋতুতে এদের পালকের রঙ সাদা থাকলেও বছরের অন্য সময় রঙ ধূসর হয়।
(৭) এরা ২-৪টা করে ডিম পাড়ে তবে ২টির বেশি ডিম ফুটে ছানা হয়না।
(৮) পাখি জগতে এরা সবচাইতে কমজোরী বাসা বানায়।
(৯) উত্তর -পূর্ব ভারতে এরা জুন- নভেম্বর মাসে আসে এবং যায়। জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে ডিম পাড়া, তা দেওয়ার জন্য সময় নির্ধারণ করে এরা। ডিমে তা দেওয়া ২০-২৫ দিন পর্যন্ত চলে। পালা করে মা/বাবা দুজনেই তা দেয়।
(১০) বছরের প্রথম বৃষ্টি হবার পর এই পাখিদের কয়েকজন ১ম জায়গাটি সমীক্ষা করে যায়। তারপর পাখিদের দল এসে ভীড় করে।
(১১) শামুকখোল পাখিকে KEYSTONE বলে। এদের উপস্থিতি বর্ষার বার্তা বয়ে আনে। এদের অনুপস্থিত প্রমান করে খরা আসন্ন। এদের দেখলে জানা যায় কাছেই জলাশয় আছে।
(১২) একসময় মানুষ এই পাখীর মাংস খেতো। এই পাখীদের রক্ষা করার স্বার্থে সবার আগে এগিয়ে আসেন ব্যাঙ্ককের বৌদ্ধসন্ন্যাসীগণ।
(১৩) নদীতে এদের প্রতিদ্বন্দ্বী হলো মাছরাঙা পাখি। মাছরাঙা ছোঁ দিয়ে মাছ ধরতে পারে কিন্তু শামুকখোল সেটা পারেনা।
(১৪) বাসা তৈরি করার জন্য জায়গা নিয়ে এরা বাছবিচার করেনা, এজন্য এদের সংখ্যা বেশি।
(১৫) এদের ছানারা খুবই খেতে পারে। ১৫ দিন বয়সের একটি ছানা নিজের শরীরের ওজনের সমান খাদ্য খেতে পারে।
(১৬) ২০ দিন পর্যন্ত মা/বাবা পালা করে ছানাদের পাহারা দেয়। ২৫ দিনের মাথায় বাচ্চাদের শরীরে ওড়ার পালক গজানো শুরু হয়ে ৫০ দিনের মাথায় ওড়ার পালক সম্পূর্ণ হয়ে যায়। ৫০-৬০ দিনের মাথায় বাচ্চারা ১ম ওড়া শুরু করে।
(১৭) এই পাখির বয়স বাড়ার সংগে সংগে ভোকালকর্ড চেপে আসতে থাকে। এজন্য বাচ্চারা যত জোরে ডাকতে পারে বড়রা তত জোরে ডাকতে পারেনা।
(১৮) ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে ভাববিনিময় করে থাকে।
(১৯) এই পাখির শত্রু হলো প্যাঁচা- বাজপাখি- কাক- ঈগল শামুকখোলের ডিম ও ছানা খেয়ে নেয়।
(২০) জমিতে রাসায়নিক সার দেওয়াতে ওদের খাদ্যের টান পড়েছে।
(২১) শামুকখোল পাখি LIST CONSERN (Next Threaten).
(২২) পশ্চিমবঙ্গে এই পাখি সবচাইতে বেশি ভীড় করে প্রজনন ও বংশ বৃদ্ধির জন্য ঃ- (ক) কেন্দুয়া (খ) সজনেখালি (গ) আদিনা (ঘ) যজ্ঞিনগর (ঙ) রায়গঞ্জ।
(২৩) এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলার শহর/গ্রামে (পার্বত্য এলাকাগুলি বাদে) এই পাখির কলোনী এই সময় দেখা যায়।
(২৪) জানা যায় অনেককাল পুর্বে এই পাখি শুধুমাত্র ব্যাঙ্কক, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ ভারত, চট্টগ্রাম সমুদ্র অঞ্চলে দেখা যেত।
(২৫) ১৯৬৭-৬৮ সনে প্রথম বম্বে নেচারাল হিস্টিরী সোসাইটি (BNHS) ফিল্ডস্টাডি করে।
(২৬) পৃথিবীর পর্যটন শিল্পের একটি বড়মাপের অংশ এই শামুকখোল পাখি।
(২৭) উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষি অভয়ারণ্যে এই শামুকখোলের এশিয়ার মধ্যে বৃহৎতম কলোনী রয়েছে।
(২৮) এই পাখির মল ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া দূর করতে সক্ষম।
(২৯) এদের সংগে অনেক সময় Night Heron, Cormorent, Pond Heron, Cattle Egret ইত্যাদি পাখিদেরও দেখা যায়।
(৩০) এই পাখিদের সংরক্ষণ করুন।
[পাঠকের প্রতি বিশেষ অনুরোধ লেখাটি পড়ে অবশ্যই মূল্যবান মতামত কমেন্ট বক্সে দেবেন ।]
‐———————————————————-
অরূপ গুহ
NAS Group
কোচবিহার 9474426787
ছবি :- শ্রী শুভব্রত সিকদার (বাপ্পা)।