
হার্ট অ্যাটাকের কারণ কী
খবরে প্রকাশ, “দেরাদুন: চারধাম যাত্রা শুরুর ১৬ দিনের মধ্যে কমপক্ষে ৫৮ পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে। শুধু কেদারনাথেই প্রাণ হারিয়েছেন ২৭ জন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যুর কারণ হার্ট অ্যাটাক। সরকারি সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পুণ্যার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার উপর জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তর।” (বর্তমান। ২৭ মে ২০২৪)।
1#. বিগত বছর গুলোতে মৃত্যুর হিসাব ও কারণের সাথে এই আঠান্ন (৫৮) জন পুণ্যার্থীর মৃত্যুর তুলনা করা হবে কী ? তাতে প্রকৃত কারন অনুসন্ধানের পথে আমরা পা ফেলতে পারবো।
2#.করোনাকালে এই আঠান্ন (৫৮) জন পুণ্যার্থীর ভ্যাকসিন(কোভিশিল্ড বা কোভাকসিন) নেওয়ার তথ্য কী জানানো হবে ? এঁদের টিকাকরণের ইতিহাস জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ করোনার টিকা কোভিশিল্ড এর জন্য হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা দেশে বেশ বেড়ে গেছে।
বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানী অস্ট্রাজেনেকা নিজেরাও এই ধরনের পার্শ্বক্রিয়ার কথা ব্রিটেনের আদালতে স্বীকার করেছে। দুনিয়া জুড়ে ওই অপরীক্ষিত বা অবৈজ্ঞানিক ভাবে উৎপাদিত RNA ভ্যাকসিন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
3#. ভারতে সরকারী ভাবে প্রতি বছর আঠারো লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হিসেবে বলা হয় ‘অনাহার’! এই অনাহারের কারণ যে সমাজের শ্রেণী-বৈষম্য, অসম বন্টন, বেকারীত্ব ও দরিদ্রতা – তা কখনো প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। শেখানো হয়না এমবিবিএস সিলেবাসে।
4#. ভারতে প্রতি বছর পাঁচ লক্ষ যক্ষা রোগী মারা যান। কারণ হিসেবে যক্ষার জীবাণুদের দায়ী করা হয়। কিন্তু কখনো সমাজের শ্রেণী-বৈষম্য, অপুষ্টি, বেকারীত্ব ও দরিদ্রতাকে প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় না। একজন যক্ষারোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে এ আমার উনচল্লিশ বছরের অভিজ্ঞতা।
5#. ভারতে প্রতি বছর কুড়ি লক্ষ শিশু পাঁচ বছরের নীচে, মৃত্যুর কারণ, মা ও সন্তানের অপুষ্টি, আন্ত্রিক, অনাহার, ফুটপাতের জীবন, সংক্রমণ, নেশা করা ইত্যাদিকে দায়ী করা হয়। কখনো দরিদ্রতা, অসাম্য, অশিক্ষা, বঞ্চনা, শ্রেণী-শোষণ ইত্যাদির কথা বলা হয় না।
6#. শাসকশ্রেণীর প্রতিষ্ঠান সমূহের বিজ্ঞান চর্চা ও প্রয়োগের সাথে জনমানুষের বিজ্ঞান চর্চা ও প্রয়োগের শ্রেণী-সম্পর্ক রয়েছে।
শাসকশ্রেণীর বিজ্ঞানী ও জনগণের বিজ্ঞানীর দৃষ্টিভঙ্গীর শ্রেণী-রূপ রয়েছে।
হার্ট অ্যাটাকের কারণের গবেষণা ও অনুসন্ধানের সাথে শ্রেণী-চেতনার সম্পর্ক রয়েছে।
শাসকশ্রেণীর সরকার, বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান ও বিজ্ঞানীরা নিজেদের শ্রেণী-স্বার্থে সঠিক বৈজ্ঞানিক তথ্য জনগণের সামনে কোন দিন আনবে না। আমাদের মিথ্যা, বেঠিক, প্রতারণাপূর্ণ তথ্যের অনুসন্ধান চালিয়ে সত্যের সন্ধান করতে হবে।
———————————————————————————————————————————————————————————————————————-
স্বপন জানা। ২৮ মে ২০২৪। কলকাতা।
সৌজন্য : সোসাইটি ফর সোসাল ফার্মাকোলজি।
ছবি সৌজন্য : গুগল