‘৭০ দশকের মাঝামাঝি থেকে বিজপুর তথা কাঁচরাপাড়া- হালিশহর-কল্যাণী-মদনপুর হরিণঘাটা নৈহাটি ( ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা) অঞ্চলে বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদের একটি শাখা সংগঠন হিসাবে বেশ কিছু কাজকর্ম চলত ।
মূলত সর্বস্তরে বিজ্ঞান চেতনা প্রচার-প্রসারের জন্যই ছোট ছোট কর্মসূচি নেওয়া হতো । আলোচনা সভা , পথসভা , প্রদর্শনীও কুইজ এগুলি করা হতো। মূলত ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে এই কর্মসূচি বেশির ভাগটাই হত স্কুলে ছোট ছোট আলোচনা সভা, দিবস পালন,বক্তৃতা প্রতিযোগিতা, কুইজ কম্পিটিশন ইত্যাদি করা হতো। কয়েক বছর চলার পরে নতুন করে আবার ভাবনা চিন্তা শুরু হয় ।
১৯৭৯ সালের মাঝামাঝি থেকে স্থানীয়ভাবে একটি পত্রিকা প্রকাশ করা হয়। পত্রিকাটি ছিল মূলত ট্যাবলেট টাইপের। পত্রিকাটি মাসে একটি করে প্রকাশ করা হতো। কৃষ্ণনগর থেকে ছাপা হতো ।
পত্রিকাটি নাম ছিল “দ্বান্দ্বিক” অর্থাৎ দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ এর অ-আ-ক-খ ।

মূলত বেশ কিছু বিদ্যালয়ের মাস্টারমশাই এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীরা এই পত্রিকাটি প্রকাশ করতো। পত্রিকাটি এক বছরের কিছু কম সময় প্রকাশ করার পরে পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে। মূলত আভ্যন্তরীণ কারণেই বন্ধ হয়ে যায়। দুটো গ্রুপে ভাগ হয়ে যায়। কিছু জন ঠিক ঠিক করলেন তারা সরাসরি রাজনীতি করবেন ।আর কিছু জন ঠিক করলো ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে এবং সর্বস্তরে বিজ্ঞান চেতনার প্রচার-প্রসারের কাজটি গুরুত্ব সহকারে করবে ।’৮০ দশকের গোড়া থেকেই বিজ্ঞান ভাবনা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন স্তরের কর্মসূচি চলছিল ।বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদের কিছু কাজ কর্ম তে অংশগ্রহণ করা হতো।এভার চলতে চলতে মূলত হালিশহর — বারাকপুর- কল্যাণী -নদীয়া বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীরা সম্মিলিত ভাবে একটি বিজ্ঞান সংস্থা তৈরি করার প্রয়াস শুরু করল। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. মনীন্দ্র নারায়ন মজুমদার এ বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা নেন ।২৪ পরগনা- নদিয়া – জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন সময়ে বিজ্ঞানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে যেতেন এবং উৎসাহ প্রদান করতেন। বিভিন্ন সময়ে বিজ্ঞানের সেমিনারে আলোচনা করতেন ।

১৯৮০ সালের ৩১শে অক্টোবর কাঁচরাপাড়া শ্রী শ্রী মান্দারি হাই স্কুলে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় । সুকুমার রায়, মনীষা উকিল, উজ্জ্বল কান্তি রায়, নমিতা রায় সহ বেশ কিছু উৎসাহী ছাত্র-ছাত্রী এই সভা আহ্বান করেন।এই সভাতেই কাঁচরাপাড়া বিজ্ঞান দরবার সংস্থার সূচনা শুরু হয় এই সভাতে ড.মনীন্দ্র নারায়ন মজুমদার মজুমদার সভাপতিত্ব করেন।প্রায় ২৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ছাত্র ছাত্রীসহ এই সভায় উপস্থিত থাকেন।এই সভায় দীর্ঘ সময় ধরে আলাপ আলোচনা চলে।ঠিক হয় যে বিজ্ঞানকে সমাজমুখী আবার সমাজ কে বিজ্ঞানমুখী করার প্রয়াস নেওয়ার জন্য একটি বিজ্ঞান সংস্থা ‘কাঁচরাপাড়া বিজ্ঞান দরবার’ তৈরি করা হবে। এর প্রধান কাজ হবে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞান চেতনার প্রচার-প্রসার। এছাড়া সর্বস্তরে বিজ্ঞান চেতনার প্রচার ও প্রসার I সেই ১৯৮০ থেকে কাজকর্ম চলতে শুরু করল। তারপর থেকে ৪৩ বছর অতিক্রান্ত। কাজকর্মের ব্যাপ্তি বেড়েছে, পরিসীমা বেড়েছে। বিজ্ঞানের কাজকর্ম চলতেই থাকবে চলতেই থাকবে।