
বিশ্ব পরিবেশ দিবস এবং আমাদের ব্যর্থতা
============================
সারা বিশ্বে মহা ধুমধাম করে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হবে। ১৯৭২ সালের জুন মাসের ১ম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক স্টকহোম কনভেনশনে ৫ জুন দিনটি বিশ্ব পরিবেশ দিবস স্বীকৃত।
পৃথিবীর জল, বায়ু, মাটি, খনিজ উৎস, বনাঞ্চল ও সমুদ্র এসব প্রতিটি ক্ষেত্রেই মানুষের সম-অধিকারের কথা এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন থেকে গৃহীত হয়েছিল।
১৯৭২ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ৫২ বছরে পরিবেশের উন্নতির জন্য আমরা কোন কিছুই করে উঠতে পারিনি। অসংখ্য সরকারি ও বেসরকারি সেমিনার ও কনফারেন্স হয়েছে, গবেষণাপত্র ও বই প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু কোন কার্যকরী পদক্ষেপ কি কিছু নেওয়া হয়েছে?
পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বিশ্ব উষ্ণায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণ, তেজস্ক্রিয় দূষণ, নদী ও জল দূষণ সহ কোন বিষযেই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান হয়ে ওঠে নি। পরিবর্তে দিন দিন সমস্যা বেড়েই চলেছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী দেশ আমেরিকা ইতিমধ্যেই পরিবেশ সম্মেলনের স্বীকৃত অঙ্গীকারগুলি থেকে নিজেদেরকে সরিয়ে নিয়েছেন এবং বর্তমান ট্রাম্প জামানায় পরিবেশের সংকট আরো বেড়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক সনদগুলি তারা মানছে না, নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে সেগুলিকে ভোগ করতে চাইছে। এর ফলে পরিবেশের বিপর্যয় আরও ঘনীভূত হচ্ছে। ইতিমধ্যে পৃথিবীর বড় বড় বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, পৃথিবীতে যেভাবে দূষণ বেড়ে যাচ্ছে, তাতে পৃথিবীর তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পাবে এবং পৃথিবীর বহু দেশ জলের তলায় চলে যাবে। পৃথিবীর মানচিত্র বদলে যাবে ।
বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং পরিবেশের উন্নতি সম্পর্কে হতাশার সুরে বলেছেন মানব সভ্যতাকে বাঁচাতে হলে পৃথিবী থেকে অন্য গ্রহের পাড়ি দিয়ে সেখানকার পরিবেশকে সুযোগ্য করে তুলতে হবে। আগামী ১০০ বছরের মধ্যে পৃথিবী আর মানুষের বাসযোগ্য থাকবে না।
যাইহোক, পৃথিবীর এই মারাত্মক পরিবেশ সমস্যায় শুধুমাত্র ৫ই জুন আমরা পরিবেশ নিয়ে ভাববো, কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করব, সে কথা ভুলে বছরের ৩৬৫ দিন প্রতি ঘন্টায় আমাদেরকে পরিবেশ নিয়ে ভাবতে হবে। পরিবেশের উন্নতির জন্য ভালো কিছু করতে হবে।
তবেই পরিবেশ বাঁচবে, আর এখানেই পরিবেশ দিবসের সার্থকতা।
প্রচারে : সুরজিৎ দাস সম্পাদক, বিজ্ঞান দরবার ও ড. গোপাল কৃষ্ণ গাঙ্গুলি, সভাপতি, বিজ্ঞান দরবার ।
ই-মেল: bijnandarbar1980@gmail.com
মোবাইল: 7980121478 / 9231545191 / 7980726276 / 9433869718