
প্লাস্টিকের কোনও বিকল্পের খোঁজ না পেলে, পুরোপুরি ভাবে উৎপাদন বন্ধ করা এই মুহুর্তে সম্ভব না। কারণ আমরা ভীষণ ভাবে প্লাস্টিক দ্রব্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি, যদিও সেটা একেবারেই কাম্য ছিল না। অর্থনৈতিক কারণেও হয়তো সরকারিভাবে প্লাস্টিক উৎপাদন বন্ধ করা যাবে না, তাতে মেডিক্যাল ডিভাইস সহ বহু জরুরি দ্রব্যের জোগান বন্ধ হবে। এমতাবস্থায়, আমাদের ব্যাক্তিগত ও সামাজিক স্তরে এর নিয়ন্ত্রিত ও সর্বনিম্ন ব্যবহার এবং উপযুক্ত ডিসপোসালের দিকে নজর দিতে হবে, বললেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক পুনর্বসু চৌধুরি। তিনি ১৮-ই জুুন, ২০২৫ বুধবার নারকেলডাঙ্গা হাইস্কুলে পড়ুয়াদের নিয়ে আয়োজিত পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য বিষয়ক পড়ুয়াদের একটি শিবিরে বক্তব্য রাখছিলেন।
অনুষ্ঠানটি নারকেলডাঙ্গা স্কুলের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজন করে ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স ও ন্যাশানাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স এর কলকাতা শাখা। সহযোগিতা করে পিপলস্ অ্যাসোসিয়েশন ফর সায়েন্স এন্ড এনভায়রনমেন্ট (পেস)। আয়োজক স্কুল ছাড়াও বেলেঘাটা দেশবন্ধু মেইন, শুড়াকন্যা গার্লস, কমলা বিদ্যামন্দির ও পাঞ্চজন্য গার্লস এর শতাধিক পড়ুয়া এতে যোগ দেয়। এই অনুষ্ঠানে মাইক্রো-প্লাস্টিক কীভাবে প্রতিদিন আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করেচলেছে, তা অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় পড়ুয়াদের বুঝিয়ে বলেন বিজ্ঞানী চিত্রা মন্ডল। তিনি পড়ুয়াদের নিজেদের বাবা-মাকে বাজার করতে যাওয়ার সময় কাপড়ের ব্যাগ উপহার হিসাবে হাতে ধরিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন।
এই শিবিরে অন্যতম আকর্ষণ ছিল ‘স্টুডেন্টস্ অ্যাক্টিভিটি প্রোগ্রাম‘। এতে পড়ুয়ারা তাৎক্ষণিক বক্তৃতা, পোস্টার প্রদর্শনী ও প্রবন্ধ লিখন প্রতিযোগিতায় নিজেদের পরিবেশ ভাবনা তুলে ধরে। সংবিধানের 51 এ ধারায় উল্লিখিত নাগরিকদের মৌলিক কর্তব্য হিসাবে পড়ুয়াদের বিজ্ঞানমনস্ক, প্রকৃতি-বান্ধব তথা মানবতাবাদী হওয়ার পরামর্শ দেন পেসের সহ-সভাপতি অধ্যাপক সিদ্ধার্থ জোয়ারদার।
উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানীগণ- ড. হেমন্ত কুমার মজুমদার, অধ্যাপক অরুন লাহিড়ি মজুমদার ও ড. শ্যামল রায়; পেসের অপর সহ-সভাপতি ড. দীপঙ্কর চক্রবর্তী, নারকেলডাঙ্গা স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিভাস বিশ্বাস, অধ্যাপক শম্পা চক্রবর্তী এবং স্কুলগুলির শিক্ষক-শিক্ষয়িত্রীরা।
সফল প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. অশোক কান্তি সান্যাল ও বিজ্ঞানী ড. গোরা ঘোষ। প্রতিযোগিতাগুলি পরিচালনা করেন ড. পল্লবী মিত্র, সুকুমার বেরা, ড. অরিন্দম মুখার্জী, হিমাদ্রী শেখর দাস। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সুচারুভাবে পরিচালনা করেন পেসের সচিব সন্দীপ সেন।