
গত ১৮ই মে ২০২৫, “বিজ্ঞান অন্বেষক” ও “গোবরডাঙ্গা গবেষণা পরিষদ” – এর আয়োজনে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় — “বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চা – বর্তমান সময়ে”। এ বিষয়ে একটি সারাদিন ধরে আলোচনা, কথাবার্তা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হলো গোবরডাঙ্গা গবেষণা পরিষদের কার্যালয়ে । এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে নিরন্তর কাজ করে যাওয়া একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি । সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন আকাশবাণীর ড. মানস প্রতিম দাস। আয়োজক ছিল গোবরডাঙ্গা গবেষণা পরিষদ ও বিজ্ঞান অন্বেষক পত্রিকা ।
আজকের এই আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞানকর্মী পঞ্চানন মন্ডল, অধ্যাপক অরুনাভ মিশ্র, ডা. ভবানীপ্রসাদ সাহু, দীপককুমার দা, ড. গোপালকৃষ্ণ গাঙ্গুলী, জয়দেব দে, অধ্যাপক সিদ্ধার্থ নারায়ণ জোয়ারদার, অসীম বসাক, বঙ্কিম দত্ত, যুধাজিৎ দাশগুপ্ত, অরণ্যজিৎ সামন্ত, পার্থ পাল, ড. শামীম হক মন্ডল, শ্রীমতি রিংকু দাস, দিগন্ত পাল, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, তপন কুমার গাঙ্গুলী , শৈবাল গুহ সহ আরো অনেকেই।
সঞ্চালক ড. দাস সমাপ্তি ভাষনে বলেন আজকের দিনে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা একটি চ্যালেঞ্জ। বিভিন্ন বক্তারা বিজ্ঞানচর্চার বিষয় নিয়ে বিভিন্ন দিক উল্লেখ করেছেন।
বাংলা ভাষায় তথা মাতৃভাষায় বিজ্ঞানচর্চার এই কাজটি আরো বেশি বেশি করে চালিয়ে যেতে হবে । সামাজিক মাধ্যম গুলিকে (Social Media ) আরও বেশি করে ব্যবহার করতে হবে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে বিজ্ঞানের কাজে আরো বেশি করে যুক্ত করতে হবে। বিজ্ঞানের বই ও পত্রপত্রিকাগুলিকে সকলের কাছে নিয়ে যেতে হবে। যত বেশি সংখ্যক বই, পত্র-পত্রিকা ও সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞান প্রচারে কথাগুলিকে প্রচার করতে হবে ।
সারাদিনের এই আলোচনায় বিজ্ঞানকর্মীরা, বিজ্ঞান লেখকরা সমাজকে বিজ্ঞানমুখী এবং বিজ্ঞানকে সমাজমুখী করার প্রয়াসের কথা জোর দিয়ে উল্লেখ করেন ।
“বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চা – বর্তমান সময়ে “এক জরুরি প্রয়াস ।
এই আলোচনা সভা থেকে উঠে আসে কতগুলি জোরালো বার্তা —
👉 বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চাকে এখনই আরও জোরদার করা প্রয়োজন।
👉 বাংলা বিজ্ঞান পত্রিকাগুলিকে হতে হবে সময়োপযোগী, জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত, যাতে পাঠকেরা পড়তে আগ্রহী হন।
👉 বিজ্ঞানকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে টেলিভিশন, রেডিও ও সামাজিক মাধ্যমের আরও শক্তিশালী ভূমিকা প্রয়োজন।
👉 মাতৃভাষার গুরুত্ব অপরিসীম — মাতৃদুগ্ধ যেমন শিশুর জীবনের প্রাথমিক ভিত্তি, তেমনি মাতৃভাষায় বিজ্ঞান শেখাও জ্ঞানের গভীরতা তৈরি করে।
🔍 একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক যা আশার আলো দেখায় —
প্রতি বছর ভাটনগর পুরস্কার, যা ভারতের সর্বোচ্চ বৈজ্ঞানিক সম্মানগুলির মধ্যে অন্যতম, সেখানে এক বড় অংশ বাঙালি বিজ্ঞানীরা অর্জন করে চলেছেন। এটি প্রমাণ করে, মাতৃভাষায় শক্ত ভিত্তি তৈরি হলে আন্তর্জাতিক স্তরেও বাঙালি বিজ্ঞানীরা অসাধারণ সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হন।
📚 বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৮৯.৯% ছাত্রছাত্রী বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করে। তাদের বিজ্ঞানমনস্ক করে তোলার দায়িত্ব আমাদের — শিক্ষক, গবেষক, লেখক, এবং সচেতন নাগরিকদের।
🚫 কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চা হোক আমাদের হাতিয়ার।
চলুন, সবাই মিলে গড়ে তুলি এক যুক্তিবাদী, বিজ্ঞানমনস্ক বাংলা।
গোবরডাঙ্গা গবেষণা পরিষদের কার্যালয়ে বিজ্ঞানের পত্রপত্রিকা ও বিজ্ঞানের বই বন্টনের ব্যবস্থা ছিল । অংশগ্রহণকারী সকলেই বিজ্ঞানের বই ও পত্র পত্রিকা সংগ্রহ করেন।
এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা দরকার গবেষণা পরিষদের কার্যালয়ে বিজ্ঞানের বই পত্র-পত্রিকা সব সময় পাওয়া যায়।
আগ্রহী বন্ধুরা এখানে বইয়ে পত্রপত্রিকা সংগ্রহ করতে পারবেন যোগাযোগ দীপক কুমার দাঁ গোবরডাঙ্গা গবেষণা পরিষদ মোবাইল 9064757684, জয়দেব দে 7980121478
নিজস্ব সংবাদ দাতা