
শান্তিপুর সায়েন্স ক্লাবের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল সমাজ সচেতনতামূলক সেমিনার
নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিপুর সায়েন্স ক্লাব দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানমনস্কতার বিকাশ ও সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। ১৭ মে ২০২৫ শান্তিপুরের রবীন্দ্র বিদ্যাপীঠ উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ক্লাবের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় শিখা সাহার স্মরণানুষ্ঠান। শিখা সাহা ছিলেন একজন যুক্তিবাদী, মানবদরদী সমাজকর্মী ও নারী-অধিকার কর্মী। তাঁর স্মরণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বক্তা ছিলেন সাঁকরাইল অনিল বিশ্বাস স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায় এবং কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের এমফিল উত্তীর্ণ গবেষক সঞ্চলিতা ভট্টাচার্য। উপস্থিত ছিলেন শান্তিপুর রবীন্দ্র বিদ্যাপীঠ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরজিৎ কুণ্ডু, শান্তিপুর সায়েন্স ক্লাবের সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস, রঘুনাথ কর্মকার, নয়াগ্রাম পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু গভর্নমেন্ট কলেজের ইতিহাস বিভাগের দুই অধ্যাপক সুজিত রাজবংশী ও ইন্দ্রজিৎ সরকার-সহ অনেক গুণীজন।
এই অনুষ্ঠানের প্রথমাংশে সিনে ক্লাবের উদ্যোগে ছোটদের জন্য শিক্ষামূলক তথ্যচিত্র ও চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রথমটির বিষয় ছিল যুদ্ধের ভয়াবহ বাস্তবতা এবং অন্যটির বিষয় ছাত্রছাত্রীদের শরীর ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়াংশে ছিল শিখা সাহার স্মরণে আলোচনা সভা, যার মূল বিষয়ভাবনা “সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে নারী ও পুরুষের পারস্পরিক ভূমিকা।” অধ্যাপক প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায়ের আলোচনার বিষয় ছিল, “সঙ্কটকালে নারী ও পুরুষের পারস্পরিক ভূমিকা: সাহিত্যে, সিনেমায়, পত্রপত্রিকায়”। তিনি যে কেবল সাহিত্য ও বাস্তবতার মেলবন্ধনের মধ্যে দিয়ে নারী-পুরুষের পারস্পরিক ভূমিকাকে তুলে ধরেছেন তাই নয়, তিনি “অধিকার বুঝে নেওয়া প্রখর দাবিতে” নারীর লড়াইয়ের বলিষ্ঠ স্বর প্রতিধ্বনিত করে গেছেন। সঞ্চলিতা ভট্টাচার্যর আলোচনার বিষয় ছিল “অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর: স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী ও পুরুষ”। তিনি তুলে ধরেছেন আমাদের দেশের নবজাগরণের মনীষীদের নারীভাবনা এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মঞ্চে নারীর আত্মপরিচয় গঠনের লড়াই।
এই অনুষ্ঠানের মূল শ্রোতা ছিলেন বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ও এক ঝাঁক শিশু-কিশোর। এমন অভিনব উদ্যোগটির কৃতিত্ব অবশ্যই শান্তিপুর সায়েন্স ক্লাব এবং রবীন্দ্র বিদ্যাপীঠ উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। পাশাপাশি, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ের সুচিন্তিত পরামর্শ ও ধারাবাহিক সহযোগিতা উদ্যোগটিকে সার্বিকভাবে সফল করে তুলেছে।