Posted on: November 5, 2024 Posted by: Editor Desk Comments: 0
Spread the love

গতকাল সন্ধ্যে থেকে মনটা ভালো নেই, কিছুতেই নিজেকে মানাতে পারছি না। পার্থিব যখন এম এস সি -র ছাত্র তখন থেকেই ওকেই জানি-চিনি। লিখব না – লিখব না বলে লিখতে বসলাম, মনটা যদি কিছু হাল্কা হয়। এম এস সি পরে ও কলকাতা ছেড়ে পন্ডিচেরীতে গবেষণার জন্যে চলে যায়। আবার ওর সাথে দেখা জনবিজ্ঞান আন্দোলনের সুবাদে, তবে কলকাতায় নয়, পন্ডিচেরী ও তামিলনাড়ুতে। পার্থিব ওখানে যুক্ত হয় পন্ডিচেরী সায়েন্স ফোরামের সাথে, সে সূত্রে তামিলনাড়ু সায়েন্স ফোরামের কাজের সাথেও যুক্ত হয়ে পড়ে। ‘৮০ – ‘৯০ এর দশকে ভারত জনবিজ্ঞান নেটওয়ার্কের প্রোগ্রামে যখন পন্ডিচেরী, তামিলনাড়ু ও অন্যান্য জায়গায় যেতাম তখন ওর সাথে দেখা হত। বাঙ্গালোরে যখন অধ্যাপক মাধব গ্যাডগিলের কাছে গবেষণার কাজে যায় তখনও সারা ভারত জনবিজ্ঞান নেটওয়ার্কের প্রোগ্রামে যুক্ত থাকতো। ক্রমে ক্রমে ভারত জনবিজ্ঞান নেটওয়ার্কের কেন্দ্রীয় স্তরের কাজের সাথে যুক্ত হয়ে পড়ে। এখনও পার্থিব কোন রাজ্য কোটায় সারা ভারত জনবিজ্ঞান নেটওয়ার্কের কার্যকরী সমিতিতে নেই, কেন্দ্রীয়ভাবেই আছে। বিদেশে পোস্ট ডক্টোরেটের কাজ সমাপ্ত করে কলকাতায় ফিরে এসে আশুতোষ কলেজে অধ্যাপনার কাজে যোগদান করে, আবার ওর সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি হয়, সাংগঠনিক সূত্রে নয় বন্ধুত্বের সূত্রে। আবার আশুতোষ ছেড়ে শিলং-য়ের NEHU ঘুড়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার যোগদান। এই সময়েই পার্থিব পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সাথে যুক্ত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের জনবিজ্ঞান আন্দোলনের কাজের সাথে গভীরভাবে জড়িয়ে পরে। কাজের মধ্যে দিয়েই বিজ্ঞান মঞ্চের রাজ্য নেতৃত্বের পর্যায়ে নিজেকে উন্নত করে। পার্থিবের সাথে আমার সাংগঠনিক সম্পর্কের বাইরের সম্পর্কটা অনেক বিস্তৃত। একাডেমিক সম্পর্ক ও ভাই-কাম-বন্ধুত্বের সম্পর্কটি ছিল অনেক বড়। পার্থিবের সাথে যৌথভাবে কিছু গবেষণার কাজেও যুক্ত ছিলাম। গবেষণা প্রকল্প প্রস্তুত ও তা রুপায়নের জন্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা পদ্ধতির ভাবনার ক্ষেত্রে ওর পারদর্শিতা ছিল প্রশংসনীয়। ঘন্টার পর ঘন্টা পার্থিবের সাথে খোলামালা আলোচনা হত। ঐ পরীক্ষায় যে সবসময় আমরা সফল হতাম তা নয়। পার্থিব মৌমাছি সহ অন্যান্য পতঙ্গের পরাগমিলন প্রক্রিয়ার গবেষণায় নিজেকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত করেছিল শুধু তা নয়, এগ্রোইকোলজিতেও বিশ্বের একজন প্রতিষ্টিত ব্যাক্তিত্ব। ও ছিল ব্রিটিশ ইওকোলজি সোসাইটিরও সদস্য। প্রচুর গবেষক ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদেশে পাঠিয়েছে যা বিরল। কাউকে ছোট না করেই লিখছি সাধারণতঃ গবেষক গাইডরা সহজে তার অধীনের গবেষকদের যে কোন প্রশিক্ষন, সেমিনার, সম্মেলন ইত্যাদিতে বিদেশে পাঠাতে চায় না, নিজেরাই যেতে আগ্রহী হয়। এগ্রোইকোলজির ৩ – ৬ মাসের প্রশিক্ষণে পার্থিব বিভিন্ন সময়ে প্রায় দশ জনেরও বেশী গবেষক ছাত্রছাত্রীদের নরওয়ে, রোমানিয়া, জার্মানী ও অন্যান্য দেশে পাঠিয়েছে। তাছাড়া ব্রিটিশ ইকোলজিক্যাল সোসাইটির বিভিন্ন সম্মেলনেও প্রায় সম-সংখ্যক গবেষক ছাত্রছাত্রীদে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। ও ছিল প্রচন্ড ছাত্রবৎসল ও বর্তমান জটিল আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ছিল। আমার থেকে ছয় বছরের ছোট ছিল। এই রকম একজন দিলখোলা-খোলামেলা-মুক্তমনের-আড্ডাবাজ আমার জীবনের এক বিরল ভাই-কাম-বন্ধু-কাম মানুষকে কাছে পেয়ে সুখ-দুঃখের কথা আর বিনিময় করতে পারবো না। অল্প হলেও আমি পার্থিবের মত একজন গবেষক বিজ্ঞানীর সাথে গবেষণার কাজে যুক্ত হতে পেরেছিলাম তাতে আমি নিজেকে গৌরবান্বিত ও ধন্য বোধ করি। পার্থিব ও আমার অধীনে যৌথভাবে একজন ডক্টোরেট অর্থাৎ পি এইচ ডি করেছে। কয়েকটি গবেষণা পত্রও যৌথভাবে প্রকাশ করেছি। আজ সকালে খুজে কয়েকটি পেলাম। সেগুলি এখানে দেওয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না। আরও কিছু হয়ত প্রকাশ করা যেত, সেগুলি আমার গাফিলতির জন্যেই হয়নি – সে বিষয়ে ওর অনুযোগ ছিল।
1. Sarmistha Saha, Parthiba Basu and Tapan Saha: “Size Does Matter : Role of Large Size Wetlands in the Diversity of Wetlands in the Diversity of Wetland-Dependent Bird Species of East Kolkata Wetlands” published in a book entitled “Current Perspectives in Natural Resource Management” published by Progressive Publishers, Pp. 49-67, September,2014.
2.Sarmistha Saha, Tapan Saha and Parthib Basu :”Planktons in Dirty Water: Carbon Cycling Process of Sewage Fed Fisheries in East Kolkata Wetland, India” Published in a journal “Wetlands” published by Springer, Vol 36:415 doi:10.1007/s13157- 016-0750-y, First Online: 11 March 2016
3. Sarmistha Saha, Tapan Saha, Parthiba Basu: “Seasonal Changes in Zooplankton and Macro-fauna Populations of the East Calcutta Wetland Fish Ponds” published in a journal “Proc Zool Soc” a Springer publication, published online (DOI 10.1007/s12595- 016-0173-z 20 April, 2016.
4. Sarmistha Saha, Parthiba Basu and Tapan Saha: “Plankton Mediated Carbon Cycling Process in Sewage-Fed Fisheries” published in a book titled “WETLAND – CRISIS AND OPTIONS” published by Associated Publishing Company, a division of Astral International Pvt. Ltd. Page 229-248, 2016.

—————————————————————-

লেখক : তপন সাহা, পরিবেশ বিজ্ঞানী, বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ, যোগাযোগ : 9433022145


Spread the love

Leave a Comment