Posted on: July 27, 2024 Posted by: Editor Desk Comments: 0
Spread the love

Mimicry কী :- মিমিক্রি বা অনুকৃতি হলো জীবের এমন এক পদ্ধতি যার দ্বারা কোন প্রাণী বা উদ্ভিদ অন্য কোন প্রাণী বা উদ্ভিদের মত মিল সৃষ্টি করে অন্য জীবের আক্রমণ থেকে রক্ষা পায় কিংবা শিকার ধরতে ব্যবহার করে থাকে। এই মিমিক্রি প্রধানত তিন প্রকার, যথা –

(১) রক্ষণাত্মক (protective) মিমিক্রি ।

(২) আক্রমণাত্মক (aggressive) মিমিক্রি ।

(৩) সজ্ঞান (conscious) মিমিক্রি ।

নিম্নাংশে এই তিন প্রকার মিমিক্রি বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

১) রক্ষণাত্মক মিমিক্রি (protective mimicry) :- এই পদ্ধতিতে জীব প্রধানত নিজেকে অন্য জীবের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ব্যবহার করে থাকে । এই পদ্ধতিকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয় যথা – কনসিলিং মিমিক্রি ও ওয়ারনিং মিমিক্রি 

(ক) কনসিলিং মিমিক্রি (concealing mimicry) :- এই পদ্ধতিতে জীব নিজেকে পরিবেশের মধ্যে লুকিয়ে ফেলে বা পরিবেশের মধ্যে মিশেয়ে নেয় ফলে শত্রু তাকে খুঁজে পায় না। উদাহরণ :- “কালিমা” নামক প্রজাপতি যার গঠন এবং রং এমন হয় যে তাকে দেখে শুকনো গাছের পাতার মতো মনে হয়। ফলে এটি গিরগিটি, ছোট পাখিদের মত শিকারী প্রাণীর হাত থেকে রক্ষা পায় ।

“ফাইলাম” নামক পতঙ্গের দেহ গঠন ও রং এমন হয় যে তাকে দেখে ছত্রাক সংক্রমিত কোন সবুজ পাতার মতো মনে হয় ।

“স্টিক‌ ইনসেক্টের” দেহ গঠন ও রং এমন হয় যে তাকে দেখে একটি সরু শুকনো গাছের ডাল বলে মনে হয়, ফলে এটি একটি গাছের ডালের সাথে সহজেই মিশে যায় ।

খ) ওয়ারনিং মিমিক্রি ( warning mimicry) :- এই পদ্ধতি সাধারণত নির্বিষ বা অক্ষতিকর প্রাণীরা ব্যবহার করে থাকে । এই পদ্ধতিতে জীব অন্য কোন বিষাক্ত বা ক্ষতিকারক জীবের মতো মিল তৈরি করে, বা নকল করে নিজেকে রক্ষা করে । উদাহরণ – (ক) Milk Snake এটি একটি  নির্বিষ সাপ কিন্তু এর দেহ গঠন ও রং দেখে বিষধর কোরাল সাপের মত মনে হয় ।

(খ) False Coral এটি একটি মাঝারি বিষের সাপ কিন্তু এর দেহ গঠন ও রং দেখে বিষধর কোরাল সাপের মত মনে হয়।

(গ) Dynastor darius :- এটি একটি প্রজাতি যার পিউপা অবস্থাকে দেখে একটি বিষধর সাপের মতো মনে হয়।

(ঘ) নির্বিষ ঘরচিতি সাপ যাকে দেখে বিষধর চন্দ্রবোড়ার মতো মনে হয়, এছাড়া কিছু ঘরচিতি সাপকে দেখে বিষাক্ত কালাচের মতো মনে হয় ।

২) আক্রমণাত্মক মিমিক্রি (Aggressive Mimicry) :- এই পদ্ধতিটি প্রধানত শিকারি প্রাণীরা শিকার ধরার জন্য ব্যবহার করে থাকে। উদাহরণ সিং যুক্ত ব্যাঙ (সেরাটোক্রিস), লোফিয়াস। Aggressive Mimicry আবার দুই প্রকার যথা – (ক) Concealing mimicry  ও (খ) Alluring Mimicry .

(ক) Concealing Mimicry :- এই পদ্ধতিতে জীব নিজেকে পরিবেশের সাথে মিশিয়ে নেয় ফলে শিকারী প্রাণী সহজেই শিকারের কাছাকাছি যেতে সক্ষম হয় । উদাহরণ :- ক্যামেলিয়ন এটি একটি গিরগিটির প্রজাতি যা খুব সহজেই নিজের রং পাল্টাতে পারে ফলে পরিবেশে নিজেকে লুকিয়ে ফেলে, এছাড়া অক্টোপাস, স্টোন ফিস (পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত মাছ) এরা নিজের রং পাল্টে পরিবেশে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারে ।

(খ) Alluring Mimicry :- এই ক্ষেত্রে শিকারি জীব এমন ছদ্মবেশ ধারণ করে যে, শিকার নিজেই শিকারির দিকে আকৃষ্ট হয়ে শিকারির কাছে চলে যায় ও শিকারি তাকে সহজেই ধরে ফেলে ।

যেমন – সেরাটোক্রিস এটি চুপচাপ এক জায়গায় বসে থেকে মাথার উপরে একটি আঙ্গুল / প্রবর্তক ঘোরাতে থাকে, এতে শিকার শিকারির কাছে এগিয়ে আসে ও শিকারির হাতে শিকার হয় ।

(৩) সজ্ঞান মিমিক্রি (Conscious mimicry) :- এক্ষেত্রে প্রাণী বিপদের আভাস পেলে মৃত প্রাণীর মতো অভিনয় করে, ফলে শিকারির হাত থেকে রক্ষা পায় । যেমন – ওপোসাম ( Opossum ) যাকে ভয় দেখালে সাময়িকভাবে অচেতন হয়ে পরে, fainting goat নামক এক প্রজাতির ছাগলকে হঠাৎ করে চমকে দিলে সাময়িকভাবে অজ্ঞান হয়ে যায় ।

এছাড়া Hog – Nosed snake যা ভয় পেলে মৃত হবার নাটক করে ।

 

[পাঠকের প্রতি বিশেষ অনুরোধ লেখাটি পড়ে অবশ্যই মূল্যবান মতামত কমেন্ট বক্সে দেবেন ।]

‐———————————————————

লেখক : Jit Mandal, B.Sc. zoology, 

nature lover , member Jalpaiguri Science and Nature Club(JSNC) , sanke rescuer 

Email… jeetmandaljsnc@gmail.com


Spread the love

Leave a Comment