
সিদ্ধার্থ গুহরায় কি শুধুই পাঠ্যপুস্তক লেখক?
সিদ্ধার্থ গুহরায় প্রয়াত হয়েছেন একেবারেই অকালে। ফেসবুকে বহুজন ওঁকে নিয়ে লিখেছেন। প্রায় প্রত্যেকেই ওঁর লেখা ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তকের কথা উল্লেখ করেছেন। পাঠ্যপুস্তক লেখক পরিচয়কে অনেকে কম গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। কিন্তু সিদ্ধার্থদা যে উচ্চাঙ্গের পাঠ্যপুস্তক লিখেছেন তা খুব সুলভ নয়। কেন লিখতেন তিনি? এককথায় বলা যায়, ছাত্রদরদ থেকে। নতুন সিলেবাসে নতুন কোনও বিষয় যুক্ত হলে অধ্যাপকরাও তাঁর কাছে পাঠ্যপুস্তক লিখে দেওয়ার আবদার করতেন। আর সিদ্ধার্থদা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সে আবদার মেটাতেন। এই বইগুলো লিখেছিলেন বলেই এতো ছাত্র, যাদের অনেকেই তাঁকে কখনও দেখেনি, ফেসবুকে তাঁদের খারাপ লাগা জানিয়েছে।
তাঁর পাঠ্যপুস্তক রচয়িতার পরিচয়কে কোনওরকম লঘু না করেও বলতে চাই, তাঁর অন্য পরিচয়গুলোও তুলে ধরা দরকার। তিনি মানবাধিকার কর্মী। আর তাঁর এই অবস্থান থেকে তিনি কাশ্মীর আর প্যালেস্টাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইতিহাস লিখেছেন। লিখেছেন আরও নানান বই। গবেষণা করেছেন ট্রামশ্রমিকদের নিয়ে। সেই বইও বেরিয়েছে। তিনি খুব ভালো শিক্ষক আর অসম্ভব ভালো একজন মানুষ ছিলেন।
অনেকেই ওঁর সম্বন্ধে আমি কেন কিছু লিখিনি জানতে চেয়েছেন। আসলে এক একটা মৃত্যু এতো মন খারাপ করে দেয় যে তখুনি কিছু লিখতে ইচ্ছে করে না। তবু অবিচুয়ারি লিখতে হয়। লিখতে হয় সঠিক তথ্য লিপিবদ্ধ করার তাগিদ থেকে। লিখতে হয় ইতিহাসের প্রতি নিষ্ঠ থেকে। এবারও লিখব। দুটো পত্রিকা ইতিমধ্যেই লিখতে বলেছে। মন খারাপ লাগে; আমি কি অবিচুয়ারি লেখকই হয়ে যাচ্ছি!
এই ছোট লেখা সিদ্ধার্থদার সব দিক তুলে ধরছে না। এই লেখার উদ্দেশ্য দুটো : ১। সকলকে জানানো যে তাঁর গুণমুগ্ধরা তাঁকে স্মরণ করার উদ্যোগ নিয়েছেন ৩০ জুলাই।
আর ২। ২৪ জুলাই তাঁর জন্মদিন। প্রথম জন্মদিন, যেখানে তিনি নেই।
পাঠকের প্রতি বিশেষ অনুরোধ লেখাটি পড়ে অবশ্যই মূল্যবান মতামত কমেন্ট বক্সে দেবেন ।]
‐——————————————————————————————————————————————————-
লেখক : অধ্যাপক সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় ইতিহাস বিভাগ কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়