Posted on: June 16, 2024 Posted by: Editor Desk Comments: 0
Spread the love

জলাভূমি নিয়ে গত ৫ বছর ধরে একাধিক লেখালেখি করেছি। বিশেষ কেউ পড়েননি বা পড়লেও গ্রহণ করেননি। আবার একটু লিখছি। বারাসাতে অনেকগুলো জলাভূমি ছিল : ১. পান্নাঝিল- এখন পান্না ডোবা । একে ঘিরে জমে উঠেছে বাড়ি বাজার দোকান আর ঘাস দূর্বা গাছপালাহীন কংক্রিটের আবাসস্থল, চারিপাশ বাঁধানো। ডোবায় পান্না জনপদের নোংরা জল আর আবর্জনা মেশে। ২. ব্যারাকপুর রোড সংলগ্ন বিশাল জলাভূমি- এখন অ্যাডামাস, আনন্দবাজার, ল্যারিকা, ম্যাগনোলিয়া আরও অনেকে স্থায়ী দখলদারিত্ব পেয়েছে। গাছপালা, মাঠ, ঘাট, জল ও জীবন উধাও। ৩. সরোজ পুকুর-এখনও বেঁচে আছে। এককালে এর পাড়ে সমুদ্রের মতো ঢেউ খেলতো, জলে বুদ্বুদ তথা ফেনা দেখা যেত। আজ ওর চারপাশে কংক্রিটের আবরণ। জল মাটি আর জলজ জীবনের লীলা খেলা অবরুদ্ধ। ৪. হাতিপুকুর- এটি এখন বিনোদন ক্ষেত্র। জল প্রায় নেই। বাস্তুতন্ত্র বিপন্ন। ৫. মাকড়শা পুকুর- এখনও ধুকে ধুকে বেঁচে আছে।

শক্তিতত্ব অনুযায়ী পরিবেশে প্রধান দুটি অংশ হচ্ছে উৎস (source) ও প্রশমন স্থান (sink) । জলাশয় তথা জলাভূমি হচ্ছে সেই sink । এখানে এসে জল ধীরে ধীরে পরিশ্রুত হয় ও মাটির গভীরে জমা হয়। পরিবেশে জল মাটি বায়ু গাছপালা ও প্রাণী জগতে এক ভারসাম্য রক্ষা করে। একদিন জলাভূমি দিবস পালন করে, পদযাত্রা করে, সেমিনার করে কিছুই হয় না। তবুও তো করতেই হয়। ছবিতে সরোজিনী পল্লীর পুকুর-স্থানীয় সচেতন ও অনুভবী মানুষ ঐ পুকুরকে খুব যত্ন নিয়ে রক্ষা করছেন। এভাবে সবাই অনুভবী হলে পরিবেশ বাঁচে। অপর ছবিটি শিশুমঙ্গল পাড়ার কাছাকাছি একটি জলাশয়। বড় জলাশয় ছিল কংক্রিটের উন্নয়নে এখন আবর্জনা আগারে পরিনত হয়েছে। গাড়িতে করে সংগ্ৰহ করা আবর্জনায় ভরে উঠছে বালি পুকুর, রায় বাড়ির পুকুর, কল পুকুর, পুই পুকুর আরও অনেক পুকুর। ভাটরাপল্লীর পুকুরটিতে চোরাগোপ্তা আবর্জনা জমা হচ্ছে। পাইয়োনীয়ার পুকুরে জল নেই বললেই চলে। বাঁশের খাঁচা আর অতিপৌষ্টিকতায় জলাশয় মজতে বসেছে। শেঠ পকুরের অবস্থাও অস্বাস্থ্যকর।আমার মতো সাধারণ মানুষ কি আর করতে পারি! জলাশয় পরিবেশের ছাঁকনি । একে রক্ষা করতে হলে কংক্রিটের জাল কমিয়ে মাটি ঘাস দূর্বা গাছ আর ঝোপঝাড়ের বাঁচার অধিকার রক্ষা করতে হবে। কিছু মেনে চলতে হবে। জলাশয়ে প্ল্যাস্টিক, ডিটারজেন্ট যাতে না মেশে সেটা পালন করত হবে। শহর গ্রামে একে একে বহু জলাশয় জলাভূমি হারিয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে সবুজের সমারোহ। জল, মাটি, বায়ু, জীব বাস্তুতন্ত্র বিপন্ন।

—————–‐—————————————–

[পাঠকের প্রতি বিশেষ অনুরোধ লেখাটি পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত অবশ্যই কমেন্ট বক্সে দেবেন ।]

লেখক:অসীম বসাক, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, বিজ্ঞান প্রাবন্ধিক, বিজ্ঞান প্রচারক, ভ্রাম্যমাণ বিজ্ঞান পরীক্ষাগার প্রনেতা, গানে ছড়ায় ‘ঘরে ঘরে রসায়ন’ একক অভিনয়। 

ইমেইল:asimkrbasak@gmail.com

ফোন:9432773785


Spread the love

Leave a Comment